আপনি যতই ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ করুন না কেন, একটি ধীর গতির হোস্টিং সার্ভার আপনার সকল পরিশ্রমকে নস্যাৎ করে দিতে পারে। কেউই স্লো ওয়েবসাইট পছন্দ করে না, লিঙ্কে ক্লিক করে যদি মিনিটের পরে মিনিট ধরে বসে থাকতে হয় সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ইউজারই ওয়েবসাইটটি ক্লোজ করে আলাদা সাইটে চলে যাবে, ঠিক আমি নিজে এমনটাই করি! অপরদিকে যে ওয়েবপেজ গুলো দ্রুত লোড হয়, সেগুলো বেশি এঙ্গেইজমেন্ট প্রদান করে, বেশি কনভারসেশন পাওয়া যায়, এবং সেল অনেক বেড়ে যায়! সাথে ফাস্ট লোডিং ওয়েবসাইট গুলোকে সার্চ ইঞ্জিন বেটার র্যাঙ্কিং প্রদান করে, মানে সাইট লোডিং স্পীড এর উপরে SEO এর বিরাট প্রভাব রয়েছে!
কোন ওয়েব পেজ ফাস্ট লোডিং তৈরি করার পেছনে জাস্ট ১টি বা ২টি ফ্যাক্ট নির্ভর করে না। সব অপটিমাইজেশন ট্রিক্স ঠিক থাকার পরেও ওয়েব হোস্টিং এর জন্য আপনার সাইট স্লো হতে পারে। ওয়েব হোস্টিং মূলত একটি ওয়েবসাইটের “বাড়ি” হিসাবে কাজ করে। যেমন একটি বাড়ির অবস্থান এবং গঠন তার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে, ঠিক তেমনি একটি ওয়েব হোস্টিং পরিষেবা আপনার ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে।
কিন্তু কিভাবে?
ওয়েব হোস্টিং: আপনার ওয়েবসাইটের অন্তর্নিহিত শক্তি
ওয়েব হোস্টিং হলো আপনার ওয়েবসাইটের অনলাইন বাড়ি। যখন আপনি কোন ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্রাউজারে টাইপ করেন, তখন সেই অনুরোধটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওয়েব হোস্টিং সার্ভারে পৌঁছে যায়। এই সার্ভারে আপনার ওয়েবসাইটের সকল ফাইল সংরক্ষিত থাকে। অনুরোধ পেয়ে সার্ভার সেই ফাইলগুলি ব্রাউজারে পাঠিয়ে দেয় এবং আপনি ওয়েবসাইটটি দেখতে পান। এখন ওয়েব সার্ভার যতোদ্রুত পেজটি পাঠিয়ে দিতে সক্ষম হবে ওয়েব পেজটিকে ততো দ্রুত ব্রাউজার লোড করতেও সুবিধা পাবে।
সকল ওয়েবসাইট একই রকম হয় না। কিছু ওয়েবসাইট খুব সাধারণ, অন্য কিছু ওয়েবসাইট খুব জটিল। তাই বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং প্রয়োজন হয়।
- স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট: এই ধরনের ওয়েবসাইটে সাধারণত HTML, CSS এবং JavaScript ফাইল থাকে। এই ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং বা সার্ভারলেস হোস্টিং যথেষ্ট হতে পারে।
- ডাইনামিক ওয়েবসাইট: এই ধরনের ওয়েবসাইটে ডাটাবেস এবং অন্যান্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা হয়। ওয়ার্ডপ্রেস এই ধরনের ওয়েবসাইটের একটি উদাহরণ। এই ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং বা ক্লাউড হোস্টিং ভালো বিকল্প হতে পারে।
ওয়েব হোস্টিং নির্বাচনে কি কি দেখতে হবে?
আপনার ওয়েবসাইটের প্রকৃতি অনুযায়ী হোস্টিং প্ল্যান বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক হোস্টিং প্ল্যান আপনার ওয়েবসাইটকে দ্রুত, নিরাপদ এবং সর্বদা উপলব্ধ রাখতে সাহায্য করবে।
কোন কোন ফ্যাক্টর বিবেচনা করবেন?
- দ্রুত ডিস্ক স্পীড : আপনার ওয়েবসাইট স্ট্যাটিক হোক অথবা ডাইন্যামিক, দ্রুত পেজ সার্ভ করার ক্ষেত্রে ট্র্যাডিশনাল হার্ড ড্রাইভ হতে সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি) অনেক বেশি দ্রুতগতির হয়ে থাকে। আপনি যদি আপনার পিসিতে সলিড স্টেট ড্রাইভ ব্যবহার করে থাকেন সেক্ষেত্রে পার্থক্যটা হয়তো নিজেই জানবেন! তো ওয়েব হোস্টিং এর ক্ষেত্রে অবশ্যই যে হোস্টিং প্ল্যান এসএসডি (SSD) অফার করে সেটাই কেনা উচিত হবে!
- ডেডিকেটেড রিসোর্স : আপনার রিসোর্স অন্য কোন ব্যবহারকারীর সাথে শেয়ার করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। ডেডিকেটেড রিসোর্স আপনার ওয়েবসাইটকে সুচারুভাবে চালাতে সাহায্য করবে। তবে শেয়ার্ড হোস্টিং খারাপ কিছু নয়, নতুন সাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে বা লো ট্র্যাফিক সাইটের ক্ষেত্রে খরচ বাঁচাতে শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যাবহার করা যেতে পারে। Ezohost এর মত কোম্পানি গুলো ওভার সেলিং করে না, ফলে শেয়ার্ড ক্লাউড হোস্টিং থেকেও ভালো পারফর্মেন্স পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আপনার সাইটের ট্র্যাফিক ডিম্যান্ড যদি বেশি হয়ে থাকে তবে ভিপিএস হোস্টিং বা প্রিমিয়াম ক্লাউড হোস্টিং এ ইনভেস্ট করা সবচেয়ে সেরা হতে পারে।
- ব্যান্ডউইথ: আপনার ওয়েবসাইটে কত পরিমাণ ট্র্যাফিক আসবে তার উপর নির্ভর করে ব্যান্ডউইথের পরিমাণ নির্ধারণ করুন। যেমন Ezohost ব্যান্ডউইথে কোনো রেস্ট্রিকশন প্রদান করে না, অনেক হোস্টিং প্রভাইডার ফেয়ার পরিমাণে ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করতে এলাউ করে। তবে অত্যন্ত বেশি ব্যান্ডউইথ জরুরী হলে ডেডিকেটেড সার্ভার বেস্ট।
- সার্ভারের অবস্থান: আপনার টার্গেট করা দর্শকদের কাছাকাছি অবস্থিত ডেটা সেন্টারে আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করা হলে, আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং সময় কম নিবে। এই জন্য সর্বদা ক্লাউড হোস্টিং নির্বাচন করা সেরা প্রমাণিত হতে পারে। ক্লাউড হোস্টিং সার্ভার গুলো একই সাথে বিশ্বের নানান দেশে অবস্থিত থাকে এবং ভিজিটরের সবচেয়ে কাছের লোকেশন থেকে সাইট সার্ভ করা হয়, ফলে লো লেটেন্সি এবং ফাস্ট পেজ লোডিং পাওয়া সম্ভব হয়।
- সফ্টওয়্যার এবং কনফিগারেশন: আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার এবং কনফিগারেশন সুবিধাগুলি হোস্টিং প্ল্যানে উপলব্ধ আছে কিনা তা যাচাই করুন।
দ্রুতগতির ওয়েব হোস্টিং দ্রুতগতিতে পেজ লোডিং এ সাহায্য করে!
ফাস্ট ওয়েব হোস্টিং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস, আপনি হাজারো অপটিমাইজেশন করেও সাইট ফাস্ট লোডিং করাতে পারবেন না যদি আপনার ওয়েব হোস্টিং যথেষ্ট ফাস্ট না হয়। বিশেষ করে আপনার সাইটে যদি অনেক ইলিমেন্ট থাকে এবং ভিজিটর অনেক বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে হোস্টিং প্ল্যান আপগ্রেড করার মাধ্যমে স্পীডে ইনস্ট্যান্ট পার্থক্য বুঝতে পারবেন। অনেক সময় সাইট এই জন্যও স্লো কাজ করতে পারে, কেননা একত্রে অনেক ভিজিটর সাইট ব্রাউজ করছে।
আপনাকে ওয়েবসাইট অপটিমাইজ করতেই হবে, নানান টেকনিক ব্যবহার করতে হবে ক্যাশিং সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু ওয়েব পেজ অপটিমাইজেশনই প্রথম ও এক মাত্র জিনিস নয়। আপনাকে অনেক কিছু ক্রস চেক করতে হবে। আর এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চেক হচ্ছে আপনার ওয়েব হোস্টিং প্ল্যান নিজেই যথেষ্ট ফাস্ট তো?
আবার শুধু ফাস্ট ওয়েব হোস্টিং বা অপ্টিমাইজড পেজই সবকিছু নয়, আপনার সাইটে যদি অনেক ইমেজ থাকে, বিশেষ করে ই-কমার্স সাইট সেক্ষেত্রে সিডিএন ব্যবহার করতে হবে, এতে সাইটের স্পীড টাইমে উন্নতি দেখতে পাওয়া যাবে। তাছাড়া আপনার সাইটের ভিজিটরের লোকেশনের উপরে ভিত্তি করে কাছের ডাটা সেন্টারে সাইট হোস্ট করতে হবে, এতে লোডিং টাইমে উন্নতি পাওয়া সম্ভব!
দ্রুতগতি, নিরাপদ, ঝামেলাবিহীন ওয়েব হোস্টিং খুঁজছেন? আমি Ezohost এর শেয়ার্ড ক্লাউড হোস্টিং এবং প্রিমিয়াম ক্লাউড হোস্টিং প্ল্যান গুলো চেক করতে বলবো।
Leave a Reply